পটকা মাছ খেলে হতে পারে মৃত্যু!!

Google Ads

পটকা মাছ খেয়ে বুধবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক পরিবারের দুই জন মারা গেছেন। এর আগে ২০১৫ সালে সিলেটের জৈন্তাপুরেও একইভাবে পটকা মাছ খেয়ে মারা যান ৫ জন। শ্রীমঙ্গলে নতুন করে দুইজন এই মাছ খেয়ে মারা যাওয়ায় আবারও আলোচনায় পটকা মাছ।

পটকা মাছ বাংলাদেশের নদীতে সচরাচর পাওয়া যায়। তবে পটকা নামে পরিচিত এর নাম 'বেলুন মাছ'। পটকা মাছের ৪টি বৈজ্ঞানিক নাম আছে। এটাকে গাঙ্গেয় জলজ প্রাণী হিসাবেই বর্ণনা করা হয়।

পটকা মাছ ইংরেজিতে ব্লো বা বেলুন মাছ হিসেবে পরিচিত এবং স্থানীয়ভাবে পটকা বা টেপা মাছ। দেখতে গোবেচারা টাইপের হলেও মাছটি অত্যন্ত বিষাক্ত। আমাদের সমুদ্রে এই মাছ খুব একটা পাওয়া যায় না। তবে মাঝে মধ্যে জেলেদের জালে ধরা পড়ে।

বাংলাদেশে পটকা মাছের ১৩টি প্রজাতি আছে যাদের দুটি মিঠা পানিতে এবং বাকীগুলো সমুদ্রে বাস করে। এ মাছ সম্পর্কে জেলেদের কোনো ধারণা না থাকায় তারা নিজেরা এ মাছ খায় অথবা বাজারে বিক্রি করে। বিষাক্ত এ মাছ খেয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে অথবা মারা যায়।

পটকা মাছ বিষাক্ত কারণ, এর মধ্যে 'টেট্রোডোটক্সিন' নামে এক বিবশকারী বিষ থাকে। এই বিষ কারও শরীরে ঢুকলে মৃত্যু অবধারিত। পটকা মাছের বিষ টেট্রোডোটক্সিন(টিটিএক্স) একটি শক্তিশালী বিষাক্ত পদার্থ যা মানুষের উত্তেজক (এক্সাইট্যাবল) সেল মেমব্রেনের সোডিয়াম চ্যানেল বন্ধ করে দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি মৃত্যু ঘটাতে সক্ষম।

মাছের বিষাক্ত পদার্থটি তার যকৃত, ডিম্বাশয়, অন্ত্র এবং চামড়ার মধ্যে খুব বেশি ঘনীভূত থাকে, তবে শরীরের পেশীসমূহ সাধারণত বিষমুক্ত থাকে।

সব পটকা মাছই বিষাক্ত নয়। কিছু আছে যেগুলো হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বিষাক্ত, যদিও প্রত্যেক প্রজাতির পটকা মাছের বিষের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন বাংলাদেশে নেই।

মাছের বিষের পরিমাণ নির্ভর করে এর লিঙ্গ, ভৌগোলিক অবস্থান এবং মওসুমের ওপর। প্রজননের অব্যবহিত পূর্বে এবং প্রজননকালীন সময়ে এতে অপেক্ষাকৃত বেশি বিষ থাকে এবং পুরুষ থেকে স্ত্রীজাতীয় মাছ বেশি বিষাক্ত।

কারণ, অ-কোষ থেকে ডিম্বাশয় বেশি বিষাক্ত। এ বিষের ফলে মানুষের জিহ্বা এবং ঠোঁটের স্বাদ নেওয়ার ক্ষমতা থাকে না, মাথা ঘোরে ও বমি হয় এবং পরবর্তীতে শরীর অসাড় হয়ে আসে। সারা শরীর ঝিনঝিন করে, হ্নদস্পন্দন বেড়ে যায়, রক্তচাপ কমে যায় এবং মাংসপেশী অসাড় হয়ে পড়।

ডায়াফ্রাম অসাড় হয়ে যাওয়ার ফলে শ্বাসতন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়। তবে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার বেশি যে জীবিত থাকে সে সাধারণত বেঁচে যায়। বিপদে পড়লে কিংবা উত্তেজিত হলে পানি খেয়ে অথবা পেটে বাতাস ঢুকিয়ে এরা ফুটবলের আকৃতি ধারণ করতে পারে।

একটা মাঝারি আকারের জাপানি পটকায় যে টেট্রোডোটক্সিন থাকে, তা ৩০ জনেরও বেশি লোকের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

পটকা মাছের বিষক্রিয়ায় মানুষ মারা যায় এ খবরটি জাতীয়ভাবে প্রচার করতে পারলে ভবিষ্যৎ প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় তা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। সূত্র: আইসিডিডিআরবি।

Google Ads

Google Ads

Google Ads

Google Ads

Newer Posts Newer Posts Older Posts Older Posts

Related Posts

Google Ads

Comments

Post a Comment
Loading comments...